নিম্ন-আয়ের চাকরিওয়ালাদের বেতনের খুব বেশি হেরফের না হলেও উপরের দিকে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে এবং হঠাৎ করেই আমাদের প্রয়োজনের ধরনও গেছে । বাসায় বিশাল এলসিডি স্ক্রিনের টিভি, এক লক্ষ্য টাকা দামের ফ্রিজ আর হাতে আইফোন না থাকলে ঠিক যেন চলছে না! এক পুরাতন স্টাইলের শাড়ি বউ আর কতদিন পরবে? অফিস পার্টিতে কলিগদের কাছে মান -সন্মান বাচেনা! বান্ধবীর বাচ্চার জন্মদিনের অনুষ্ঠান হচ্ছে গুলশানের বিশাল কাঁচঘেরা বুফে রেস্তোরাঁয়, সেখানে ছোটখাটো গিফট নিলে মুখ থাকে? এতোসব ভুঁইফোড় সামাজিক চাহিদা বাদ দিলেও আরও নানা রঙের চাহিদার অপশন তৈরি করতে একপায়ে খাড়া ভারতীয় সমাজের রঙিন মুখোশস্বরূপ বলিউডি চ্যানেলগুলো কিংবা নানা পণ্যের বিজ্ঞাপনের আকাশ কুসুম স্বপ্ন। সামাজিক এই সব খণ্ডচিত্রের দীর্ঘমেয়াদী ফলস্বরূপ সমাজে; বিশেষত শহুরে সমাজে একইসাথে জন্ম নেয় এক ধরনের উল্লাসিকতা এবং হীনমন্যতা,বিপদজনকভাবে যখন মানুষের স্ট্যাটাসের একমাত্র পরিমাপক হল অর্থনৈতিক মানদণ্ড।
এতটুকু পড়ে মনে হতে পারে ধান ভানতে গিয়ে শিবের গীত গাইছি কেন। কেউ কেউ এর মাঝে কমিউনিজমের গন্ধও পেতে পারেন! একটু খোলাসা করি।
ঢাকা শহরকে বিবেচনায় রাখলে এখানকার তথাকথিত ভালো স্কুলগুলোকে একটু
লক্ষ্য করি। বাচ্চা ‘মানুষ’ করার ক্ষেত্রে কোনো এক অদ্ভুত কারণে
জীবন-সমাজবিচ্ছিন্ন বিজাতীয় ভাষার বিজাতীয় কারিকুলামের ইংরেজি মাধ্যম
স্কুলগুলোর উপর আমরা ভরসা করি বেশি! দীর্ঘদিন ইংরেজিভাষী গোত্রের দাসত্ব
মস্তিষ্কে এখনও চেপে আছে আমাদের, কিন্তু এটাই কি একমাত্র কারণ?
No comments:
Post a Comment